আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার) :
কক্সবাজারের উখিয়ার সোনাইছড়িতে আলোচিত রিদুয়ান হত্যা মামলার আসামী ও মুলহোতা মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে পুতিয়া এবং মো. ইউনুচ ওরফে বদাইয়াকে ৩দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ওই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো: অলিউর মামলার তদন্তের স্বার্থে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত প্রত্যেককে ৩দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বুধবার বিকালে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (উখিয়া আমলী আদালত-০২) আদালতের বিচারক শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত সৈয়দ কাশেমের ছেলে মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে পুতিয়া এবং মো. ইউনুচ ওরফে বদাইয়া।
কক্সবাজার কোর্ট পুলিশের ওসি চন্দন কুমার দে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (উখিয়া আমলী আদালত-২) এর বিচারক শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা ৩দিনের রিমান্ড মন্জুর করেছেন।
গত ২০২১ সালের ২১ আগস্ট শনিবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত সৈয়দ কাশেমের একটি সুপারি বাগানে একই এলাকার হোসেন আহমদের ছেলে মো:রিদুয়ান হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বৈদ্যুতিক তাঁরে জড়িয়ে অপমৃত্যু বলে চালিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে পরের দিন রবিবার দুপুরে উখিয়া থানার আওতাধীন ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অলিউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্টের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পরে অভিযুক্ত আসামী ওই এলাকার মৃত সৈয়দ কাশেমের ছেলে মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে পুতিয়া (৩৫), মো: ইউনুচ ওরফে বদাইয়া (৩৮) ও মৃত শামশুল আলমের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২) কে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। উক্ত মামলায় আসামীরা আদালতে জামিন চেয়ে আত্মসমর্পন করলে আদালত জামিন নামন্জুর করে আসামী মো: ইউনুচ ও মো: ইউছুপকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্যজন জসিম উদ্দিন জামিনে রয়েছে।
এদিকে, নিহত রিদুয়ান হোসেনের পিতা হোসেন আহমদ অভিযোগ করেন- ‘‘পূর্বশক্রতার জের ধরে ওইদিন রাতের অন্ধকারে আসামী ইউছুপ ওরফে পুতিয়া এবং ইউনুচ ওরফে বদাইয়া পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যার পর আমার ছেলেকে তাদের সুপারি বাগানে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে রাখে। পরে সকালে সেই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে রিদোয়ান হোসেন মারা গেছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে গা-ঢাকা দেয়। অনেকদিন আগে থেকে আমার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জের ধরে ছেলে রিদুয়ানকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যার সঠিক বিচার চাই।’’
হোসেন আহমদ অভিযোগ করেন-‘রিদুয়ান হত্যা মামলার আসামী মোহাম্মদ ইউছুপ ও মো. ইউনুচের আগেও অসংখ্য অপরাধ করেছেন। তাদের নামে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আসামি ইউছুপ এবং ইউনুচ সুপারি বাগান রক্ষার নামে কভার তার চুরি করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ফাঁদ বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শুকর শিকার করে আসছিল। রাতে রিদুয়ানকে পিটিয়ে হত্যার পর ওই পাতানো তারে ফেলে রাখা হয়। পরে সকালে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গেছে বলে অপপ্রচার চালায়। সকালে তারা ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় টাকা দিয়ে হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু উখিয়া থানার পুলিশ প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি রেকর্ড করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।